আক্বীদা

মুতাশাবিহ আয়াত নিয়ে প্রশ্ন করায় হযরত ওমর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর) শাস্তি

তাকী তানজীম রবি, 21 এপ্রি., 2024

যেমনটা ইমাম দারেমী (রহিমাহুল্লাহ) তার ‘সুনান দারেমীতে’ তাবেঈ সুলাইমান ইবনে ইয়াসার (রহিমাহুল্লাহ) থেকে বর্ণনা করেন: একদা স্ববিগ নামে এক ব্যাক্তি মদিনায় আগমন করলো; সে কুরআনের মুতাশাবিহ আয়াত সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করতে লাগলো। ফলে ওমর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) তাকে ডেকে পাঠালেন; অবশ্য এর পূর্বে তিনি খেজুরের দন্ডে তৈরী কতগুলো লাঠি প্রস্তুত করে রেখেছিলেন। তো তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন: তুমি কে? সে বললো: আমি আল্লাহর বান্দা স্ববিগ। ওমর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) ওখান থেকে একটি লাঠি নিয়ে তাকে মারতে শুরু করলেন আর বলতে লাগলেন: আমি আল্লাহর বান্দা ওমর। তো তাকে এমন প্রহার করলেন যাতে তার মাথা রক্তাক্ত হয়ে গেল। অতপর সে বললো: হে আমিরুল মুমিনীন! হয়েছে আর লাগবেনা; মাথার মধ্যে যে ভূত চেপেছিল সব চলে গেছে। [হা. নং: ১৪৬]

সুনান দারেমীতে আরো আছে,‘ সে বললো: যদি আপনি আমাকে হত্যা করতে চান..তাহলে উত্তমভাবে মেরে ফেলুন; আর যদি আমার প্রতিকার চান..তাহলে আল্লাহর কসম! আপনার প্রহারের চোটে আমার সব রোগ ভালো হয়ে গেছে। অতপর তিনি তাকে তার এলাকায় চলে যাওয়ার অনুমতি দিলেন এবং হযরত আবু মূসা আশয়ারী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর) নিকট চিঠি লিখে পাঠালেন, “ কোন মুসলিম যেন তার সাথে উঠাবসা না করে”। পরবর্তীতে এই বয়কট তার উপর অনেক কঠিন হয়ে দাড়ালো; যারপরনে হযরত আবূ আশয়ারী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হযরত ওমর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর) নিকট লিখে পাঠালেন: “তার তওবা একনিষ্ঠ হয়েছে”; তো তিনি জবাব দিলেন:“মানুষদের তার সাথে উঠাবসা করার অনুমতি দিন”। [হা. নং: ১৫০]

------ ------

লেখকের আরো ব্লগ

আক্বীদা

ইহইয়াউ উলুমুদ্দীন এর হাদীস সংখ্যা ও একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা

তাকী তানজীম শনি, 27 এপ্রি., 2024

ইহইয়াউ উলুমুদ্দীন এর হাদীস সংখ্যা ও একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা

===============================================

ইহইয়াউ উলুমুদ্দীন এর হাদীস নিয়ে অনেকের মাঝেই একটা শীথিলতা পরিলক্ষিত হয়; যে এখানে অনেক দয়ীফ, মাওদু হাদীস ইত্যাদী রয়েছে।অবশ্য এর পিছনে কিছু কারনও রয়েছে। এ আলোচনায় পরে আসছি। তার পূর্বে এ কিতাবের হাদীস সংখ্যা নিয়ে একটা পর্যালোচনা উল্লেখ করছি।

১. মুকারার সহকারে মোট হাদীস সংখ্যা ৫৬০০।

২.মুকাররার ব্যতীত ৩৮০০ (প্রায়)।

৩.মোট হাদীসের ২০০০ এর বেশি সহীহাইনে, আর বাকিগুলোর অধিকাংশই সুনানে আরবায়ায়, আর অবশিষ্টগুলো মুসনাদে আহমাদ, সহীহ ইবনে খুযায়মা সহ অন্যান্য হাদীসগ্রন্থে রয়েছে।

আর অনেক বড় বড় ইমামগন এ কিতাবের উপর তাখরীয করেছেন। সর্বপ্রথম যিনি তাখরীয করেছেন তিনি হলেন ইমাম তাজউদ্দীন সুবকী রহ:। আর তিনি সেখানে বলেছেন যে, ৯২৮ টি হাদীসের আসল নাই। এরপর আবার যাইনুদ্দিন ইরাকী রহ: তাখরীয করেছেন। তো তিনি ইমাম সুবকীর রহ: উপর তাকীব করেছেন এবং বলেছেন ইমাম সুবকী যতগুলোর আসল পান নাই আমি তার অধিকাংশ গুলোই পেয়েছি।যার ফলে তিনি বলেছেন আমি প্রায় ২০০ হাদীস খুজে পাই নাই(এখানে লক্ষণীয়, তিনি কিন্তু বলেন নাই যে এগুলো মাওদু বরং তিনি পান নাই)

এরপর ইমাম কাসেম কুতলুবুূগা হানাফী রহ: এর উপর তাখরীয করেছেন এবং কিছু ইসতিদরাক ও করেছেন। তারপর মহান মুহাদ্দিসদের মধ্যে সবচেয়ে বড় কাজের আনজাম দিয়েছেন বাহরুল হাদীস ইমাম মুরতাযা যাবিদী রহ: ইতহাফের মধ্যে। তো পুর্ববর্তীরা যা পাননি তিনি তার তাকীব করে তাখরীয করে দিয়েছেন। যার ফলে অল্প কিছু হাদীসের আসল অজ্ঞাত ছিল।

আর বর্তমানে এর উপর ই’তিনা করেছেন শায়েখ আনাস মুহাম্মদ আদনান শারফাবী হাফিযাহুল্লাহ। তো তিনি বলেছেন বর্তমান যামানায় অনেক হাদীসের কিতাবের ব্যাপারে ওয়াকিফহাল হওয়ার ফলে প্রায় সকল হাদীসের তাখরীয করা সম্ভব হয়েছে অল্প কিছু ব্যতীত। তিনি প্রায় ২০টি হাদীসের মাওদুয়িয়াতের ব্যাপারে কথা বলেছেন।

***সর্তকতা: সালাফী ভাইরা যেহেতু তাসাউফ বিরোধী তাই তারা ইমাম সুবকী রহ: এর কথাকে খুব ফলাওভাবে প্রচার করে।

উল্লেখ্য: উপরিউক্ত তথ্যগুলো শায়েখ শারফাবীর মুহাদারা থেকে গৃহীত।তিনি আন্তজার্তিক চেচনিয়া সম্মেলনের (মুতামারুশ শীশান) অন্যতম একজন আলোচক। ইমাম ফখরুদ্দিন রাযি রহ: এর তাসিসুস তাকদিস এর মুতানি, তাছাড়া রিসালাতুল কুশায়রিয়া সহকারে আরো বহু কিতাবের সম্মানিত মুহাক্কিকও তিনি।

------ ------

আক্বীদা

দেহবাদীরা এ খ্রিষ্টান প্রফেসরের আপত্তির কি জবাব দিবে?!

তাকী তানজীম শনি, 27 এপ্রি., 2024

একবার বিশিষ্ট মুতাকাল্লিম শায়েখ ড. আলী ওমরী (হাফিযাহুল্লাহ) এর সাথে এক খ্রিষ্টান প্রফেসরের কথপোকথন হলো। তো এক পর্যায়ে ঐ প্রফেসরকে বলা হলো, আপনারা কেন বলেন যে আপনাদের প্রভু ঈসা (আলাইহিস সালামের) মধ্যে আছে (অথ্যাৎ হুলুল হয়েছে)? তখন ঐ প্রফেসর বললো কেন সমস্যা কি? আপনারা বলেন ইলাহ আরশকে মহল বা স্থান হিসেবে গ্রহন করেছে আর আমরা বলি ঈসার (আলাইহিস সালাম) উপর হুলুল হয়েছে। তো হুলুল বা স্থানগ্রহন তো উভয়টাতেই হয়েছে। আর নিঃসন্দেহে উভয়টাই মাখলুক, হয়তো গড়নে আরশ অনেক বড় আর ঈসা (আলাইহিস সালাম) অনেক ছোট। তো আপনাদেরটা জায়েজ হলে আমাদেরটা কেন জায়েয হবে না?!
শায়েখ আশয়ারী ছিলেন বলে উত্তরটা দেওয়া খুব সহজ ছিলো যে, আরশকে আল্লাহ তায়ালার স্থান হিসেবে গ্রহন করা আহলে সুন্নাতের আকীদা নয় বরং আল্লাহ তায়ালা সবচেয়ে বড় সৃষ্টি আরশের অধিপতি এবং এর থেকে সম্পর্ণভাবে অমুখাপেক্ষী।
কিন্তু দেহবাদীরা এ খ্রিষ্টান প্রফেসরের আপত্তির  কি জবাব দিবে?! 
 

------ ------